Cart

No products in the cart.

Blog

  • Home
  • Islamic

সিয়ামের আদবসমূহ

সিয়ামের আদবসমূহ

রোজাদারের জন্য জবান এবং দেহের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে হারাম ও পাপাচার থেকে বিরত রাখা আবশ্যক। কারণ সিয়ামের শাব্দিক অর্থই হচ্ছে ইমসাক অর্থাৎ বিরত থাকা।

সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমে এসেছে, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : রোজা হলো ঢালস্বরূপ; সুতরাং রোজাদার যেন অশ্লীল কাজ না করে এবং মূর্খদের মতো আচরণ না করে। যদি কেউ রোজাদারের সঙ্গে মারামারি করতে চায় অথবা তাকে গালি দেয়, তাহলে সে বলে দিবে : আমি রোজাদার, আমি রোজাদার—দুইবার (বলবে)। আর আমার আত্মা যেই সত্তার হাতে তার শপথ করে বলছি, নিশ্চয়ই রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মেশকের সুগন্ধি থেকে উত্তম।[1]

ইমাম বুখারি রহিমাহুল্লাহ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি ফাহেশা কথাবার্তা ও ফাহেশা কাজকর্ম থেকে বিরত না থাকল, আল্লাহর দোহাই তার পানাহার থেকে দূরে থাকার কোনো দরকার নেই।[2]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : কতক রোজাদারের রোজা কেবল ক্ষুধা বৈ কিছু নয়। আবার কতক কিয়ামকারীর[3] কিয়াম কেবল রাতজাগা বৈ কিছু নয়।[4]

ইমাম নাসায়ি রহিমাহুল্লাহ হাসান সনদে এবং ইমাম তাবরানি রহিমাহুল্লাহ বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : রোজা ঢালস্বরূপ যতক্ষণ তা ভেঙ্গে ফেলা হয়।

জিজ্ঞেস করা হলো : তা কী দ্বারা ভেঙে যায়?

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : মিথ্যা ও গিবত করার দ্বারা।[5]

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ক্রীতদাস উবাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, দুজন মহিলা রোজা রেখেছে, তখন এক লোক জিজ্ঞেস করল : ইয়া রসুলুল্লাহ, এখানে তো দুজন মহিলা রোজা রেখেছে, কিন্তু ক্ষুধার জ্বালায় তাদের তো মৃত্যুপ্রায় অবস্থা। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন ওই লোকের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন অথবা চুপ করে রইলেন। লোকটি এবার নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলল : ‘তাদের দুজনকে আপনি ডেকে নিন।’ উবাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন : মহিলা দুজন এলেন, এবং তাদের সামনে বড় একটা পেয়ালা রাখা হলো। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের একজনকে বললেন : বমি করো। তখন তার বমিতে রক্ত, পুঁজ ও গোশত বেরিয়ে এল এবং এমনকি আধা পেয়ালা ভরে গেল। নবিজি তারপর অপরজনকে বললেন : বমি করো। সে তখন রক্ত, পুঁজ ও ভিজা ভিজা গোশত বমি করল এবং এমনকি পুরা পেয়ালা ভরে গেল। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন : এই দুইজন আল্লাহর হালাল করা জিনিস দিয়ে রোজা রেখেছে, কিন্তু আল্লাহর হারাম করা জিনিস দিয়ে রোজা ভেঙ্গেছে। তারা দুইজন একসঙ্গে বসেছে এবং মানুষের গোশত খাওয়া শুরু করেছে।[6]

আবু শুজা দায়লামি রহিমাহুল্লাহ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উক্তি নকল করেন যে, রোজাদার ততক্ষণ ইবাদতে থাকবে যতক্ষণ না সে কোনো মুসলিমের গিবত করে অথবা তাকে কষ্ট দেয়।[7]

সুতরাং রোজাদার সবসময় ইবাদতে মশগুল থাকবে। কাজে, কর্মে ও উচ্চারণে সবসময় আল্লাহর আনুগত্যে ডুবে থাকবে। আর অন্তরের, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ও জবানের সমস্ত প্রকার গুনাহ থেকে পরিপূর্ণ দূরত্ব বজায় রাখবে। বিশেষ করে রমজান হলো সিয়ামের মাস এবং ইবাদত ও আল্লাহর আনুগত্য করার মৌসুম। এ মাসে সওয়াব যেমন দ্বিগুণ দেওয়া হয়, তেমনি গুনাহকেও বড় করে দেখা হয়।

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি ইমান ও ইহতিসাবের[8] সঙ্গে রমজানের রোজা রাখবে, আল্লাহ তায়ালা তার আগেকার সমস্ত গোনাহ মাফ করে দিবেন; আর যে ব্যক্তি ইমান ও ইহতিসাবের সঙ্গে লাইলাতুল কদরে কিয়াম করবে, তার অতীতের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।[9]

সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : শাবান মাসের শেষ দিনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সম্বোধন করলেন এবং বললেন : তোমাদের উপরে এক মহান মোবারক মাসের আগমন ঘটেছে। এ মাসে এমন একটি রজনি আছে যা হাজার মাসের থেকে উত্তম। এ মাসের রোজাকে আল্লাহ ফরজ করেছেন, এবং রাতের কিয়ামকে করেছেন ঐচ্ছিক।

এ মাসে যে ব্যক্তি একটি কল্যাণকর আচরণের মাধ্যমে নৈকট্য হাসিল করলো, সে যেন অন্য মাসের একটি ফরজ আদায় করল; আর এ মাসে যে ব্যক্তি একটি ফরজ আদায় করল, সে যেন অন্য মাসের সত্তরটি ফরজ আদায় করল।

এটা হলো সবর ও ধৈর্যের মাস, আর সবরের প্রতিদান হলো জান্নাত; এ মাস সহমর্মিতার মাস, এবং এ মাসে মুমিনের রিজিক বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

আর যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, এর ফলে তার গুনাহ মাফ হবে, জাহান্নামের আগুন থেকে সে মুক্তি পাবে এবং সে রোজাদারের সমান সওয়াব লাভ করবে, এতে রোজাদারের সওয়াবেও কোনো ঘাটতি হবে না।

তারা তখন জিজ্ঞেস করল : ইয়া রাসুলুল্লাহ, আমাদের সবার তো আর একজন রোজাদারকে ইফতার করানোর সামর্থ্য নেই।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : এই সওয়াব তাকেও দেওয়া হবে যে একটিমাত্র খেজুর দ্বারা কোনো রোজাদারকে ইফতার করিয়েছে, অথবা এক চুমুক পানি বা এক চুমুক দুধ দিয়ে ইফতার করিয়েছে। 

আর এ মাসের প্রথম ভাগ হলো রহমতের, দ্বিতীয় ভাগ মাগফেরাতের এবং শেষ ভাগ হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তিলাভের। এ মাসে যে তার গোলামের প্রতি সহজতা করল আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন এবং তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন।

এই মাসে তোমরা চারটা কাজ বেশি বেশি করো : এর মধ্যে দুইটি কাজ দ্বারা তোমরা তোমাদের রবকে সন্তুষ্ট করবে, আর বাকি দুটো থেকে তোমাদের মুখ ফেরানোর সুযোগ নেই।

তা যে দুটি কাজের মাধ্যমে তোমরা তোমাদের রবকে সন্তুষ্ট করবে সেগুলো হলো : লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুর সাক্ষ্য দেবে এবং তাঁর কাছে ইসতেগফার করবে।

আর যে দুটি কাজ থেকে তোমাদের মুখ ফেরানোর সুযোগ নেই সেগুলো হলো : তোমরা আল্লাহর কাছে জান্নাত কামনা করবে এবং তাঁর কাছে জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবে।

আর যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে পান করাবে, আল্লাহ তাকে আমার হাউজে কাউসার থেকে এমন পানি পান করাবেন জান্নাতে প্রবেশের আগ পর্যন্ত তার পিপাসা লাগবে না।[10]

তাবরানি রহিমাহুল্লাহ উবাদা ইবনে সামেত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন বলেন, রমজান তখন এসে গেছে, তিনি বলেন : তোমাদের নিকট রমজান এসেছে, বরকতের মাস, এ মাসে আল্লাহ তোমাদের আবৃত করে নেবেন, ফলে তিনি রহমত নাজিল করবেন, তোমাদের গোনাহ মাফ করবেন এবং দোয়ায় সাড়া দেবেন; আল্লাহর ব্যাপারে তোমাদের প্রতিযোগিতার দৃশ্য তিনি দেখবেন, তোমাদের নিয়ে ফেরেশতাদের সঙ্গে তিনি গর্ব করবেন, সুতরাং তোমাদের নিজেদের মধ্যে যা ভালো ও কল্যাণ আছে আল্লাহকে তা দেখাও, কারণ দুর্ভাগা তো সে যে এই মাসে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার রহমত থেকে বঞ্চিত হলো।[11]

তাছাড়া রমজান মাসের দাবি হলো কুরআন কারীমের তেলাওয়াত বেশি বেশি করা। কারণ এই রমজান মাসেই সম্পূর্ণ কুরআন শরিফ প্রথম আসমানে বায়তুল ইজ্জতে নাজিল হয়েছে, এবং এই মাসেই পর্যায়ক্রমে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্তরে কুরআন নাজিল হয়েছে। আর তাই রমজান মাসে বেশি বেশি কুরআনের তেলাওয়াত করা সুন্নত, বিশেষ করে রাতের বেলায়। হাদিসের মধ্যে ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন : রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন মানুষজাতির মধ্যে সবচেয়ে বড় দানশীল ব্যক্তি, আর তিনি সবচেয়ে বেশি দান করতেন যখন রমজানে জিবরিল আমিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। আর তিনি, অর্থাৎ জিবরিল আলাইহিস সালাম, রমজানের প্রতি রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাঁর সঙ্গে কুরআন মুজাকারা করতেন এবং রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বহমান বায়ু থেকেও বেশি দানশীল হয়ে যেতেন।[12]

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য সময়ের থেকে রমজানের রাতে কিয়ামের মধ্যে কিরাত দীর্ঘায়িত করতেন, যেমন হুজাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে ইমাম আহমদ রহিমাহুল্লাহ বর্ণনা করেন, তিনি বলেন : আমি রমজানের এক রাতে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট গমন করি, তখন তিনি নামাজে দাঁড়ান, তখন তিনি তাকবির দেবার সময় বললেন : আল্লাহু আকবার, যুল মালাকুতি ওয়াল-জাবারুতি ওয়াল-আযিমা। এরপরে তিনি সুরা বাকারা, সুরা নিসা ও সুরা আলে ইমরান তেলাওয়াত করেন; তখন এমন কোনো ভীতিপ্রদানের আয়াত এলেই রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে থামতেন।[13]

হুজাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে আরেক রেওয়ায়েতে এসেছে, তিনি বলেন : এক রাতে আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে নামাজ পড়ছিলাম। তিনি বলেন : নবিজি তখন সুরা বাকারা শুরু করলেন এবং একশ আয়াত পড়লেন, আমি তখন বললাম : এখন রুকু করা যায়। এরপর এভাবে চলতে চলতে দুইশ আয়াত হয়ে গেল, আমি তখন বললাম : এখন রুকু করা যায়। এরপরে এভাবে চলতে চলতে সুরা বাকারা শেষ হয়ে গেল, তখন আমি বললাম : এখন রুকু করা যায়। তিনি বলেন : নবিজি তখন সুরা নিসা শুরু করেন এবং তা পাঠ করেন, এবং এরপর তিনি রুকুতে যান; রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন রুকুতে বলেন : সুবহানা রব্বিয়াল আযিম। হুজাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন : তখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রুকু ছিল তাঁর কিয়ামের মতো, অর্থাৎ দীর্ঘতার ক্ষেত্রে; এরপরে তিনি সিজদা করেন এবং তাঁর সিজদা ছিল তাঁর রুকুর মতো, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন উচ্চারণ করেন : সুবহানা রব্বিয়াল আলা। আর রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোনো রহমতের আয়াত পড়ছিলেন, তা প্রার্থনা করেছিলেন, আবার যখন আজাবের আয়াত পড়ছিলেন, তা থেকে আশ্রয় চাচ্ছিলেন, এবং যখন এমন আয়াত পড়ছিলেন যাতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পবিত্রতার ঘোষণা রয়েছে, তখন তাঁর তাসবিহ পাঠ করেছিলেন।

উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু উবাই ইবনে কা’ব এবং তামিম দারি রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকে রমজানে নামাজ পড়ানোর নির্দেশ দেন। তখন তারা প্রতি রাকাতে দুইশ আয়াত করে তেলাওয়াত করতেন, আর সাহাবিরা রমজানের নামাজ তথা তারাবি থেকে কেবল শেষ রাতেই ফিরে আসতেন, সেহরি আদায়ের জন্য।

আমাদের সালাফে সালেহিনদের মধ্যে এমন তো অনেকে ছিলেন, যারা রমজানের প্রতি তিন রাতের নামাজে অর্থাৎ তারাবিতে এক খতম কুরআন শেষ করতেন; আবার কেউ ছিলেন প্রতি সাত রাতের নামাজে এক খতম করতেন, আবার কেউ প্রতি দশ রাতের নামাজে এক খতম শেষ করতেন।

আল্লামা ইবনে হাজার হাইতামি রহিমাহুল্লাহ বলেন : শাফেয়ি রাদিয়াল্লাহু আনহু পুরা রমজান মাসে নামাজ ছাড়া ষাট খতম[14] কুরআন পড়তেন, আর ইমাম হানিফাও তেমন ছিলেন; আর ইমাম যুহরি রমজান মাস এলে বলতেন : এটা তো কুরআন তেলাওয়াত ও আহার করানোর মাস।

ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে ইমাম আহমদ রহিমাহুল্লাহ বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : সিয়াম ও কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য শাফায়াত করবে। সিয়াম বলবে : হে রব, আমি তাকে দিনের বেলায় আহার ও খাহেশাত পূরণ থেকে বাধা দিয়েছি, সুতরাং তার ব্যাপারে আমার শাফায়াত কবুল করুন। আর কুরআন বলবে[15] : আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছি, সুতরাং তার ব্যাপারে আমার শাফায়াত কবুল করুন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : তখন তাদের দুজনের শাফায়াতকেই কবুল করা হবে।[16]

ইমাম মুসলিম, উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : তোমরা কুরআন তেলাওয়াত করো, কারণ কিয়ামতের দিন সে তার ধারকদের পক্ষে শাফায়াত  করবে।[17]

আর কুরআনের শাফায়াত সে ব্যক্তি লাভ করতে পারবে, যে পরিপূর্ণ হক আদায়ের সঙ্গে কুরআন তেলাওয়াত করবে। এর পূর্ণ হক আদায় হবে এর বিধিবিধান পালনের মাধ্যমে—যেমন হালালকে হালাল মানা, হারামকে হারাম মানা, কুরআনের চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া, এবং দিনে ও রাতে কুরআনের প্রতি কর্তব্যগুলো আদায় করা। যেমন ইমাম নাসায়ি রহিমাহুল্লাহ বর্ণনা করেন যে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট যখন সাহাবি শারিহ হাজরামির কথা বলা হয়, তখন তিনি বলেন : কুরআনকে সে বালিশ হিসেবে ব্যবহার করে।[18] অর্থাৎ ঘুম তাঁর উপর প্রভাব ফলাতে পারেনি, বরং কুরআনই তাঁর বালিশ হয়ে গেছে—তিনি কুরআনের প্রতি কর্তব্যগুলো এবং এর হকগুলো আদায় করেছেন এবং এর প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করেননি।

অনেকের ব্যাপারে ইমাম নববি রহিমাহুল্লাহ উল্লেখ করেন যে, তারা প্রতি সাত রাতে এক খতম শেষ করতেন, কারো ব্যাপারে বলেন তারা প্রতি ছয় রাতে এক খতম শেষ করতেন, কারো ব্যাপারে বলেন যে তারা প্রতি পাঁচ রাতে এক খতম শেষ করতেন, কারো ব্যাপারে বলেন যে তারা প্রতি চার রাতে এক খতম শেষ করতেন, তিনি অনেকের ব্যাপারে উল্লেখ করেন, তারা প্রতি তিন রাতে এক খতম করতেন, কারো ব্যাপারে বলেন তারা প্রতি দুই রাতে এক খতম করতেন, এবং কারো ব্যাপারে বলেন যে, তারা প্রতি দিনে-রাতে এক খতম করতেন, আবার কেউ দিন-রাতে দুই খতম করতেন, তাদের মধ্যে এমনও ছিলেন যারা দিন-রাতে তিন খতম করতেন, আর কেউ এমনকি দিন-রাতে আট খতম পড়তেন—চার খতম রাতে আর চার খতম দিনে; এগুলো সব আল্লাহর অনুগ্রহের নিদর্শন, এবং তাদের জন্য কুরআনকে সহজকরণ; রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : যবুরকে দাউদের উপর সহজ করা হয়েছে। তিনি তার বাহন-জন্তুকে জিন পরাতে বলতেন, আর জিন পরানোর আগেই তিনি যবুর পড়ে ফেলতেন।[19]

আর ইমাম বুখারি রাদিয়াল্লাহু আনহু রমজানে প্রতিদিন এক খতম করে কুরআন পড়তেন, আর তার খতম প্রতি রাতে ইফতারের সময় শেষ হতো। এবং তিনি বলেন : ‘প্রতিটি খতমের পরে রয়েছে দুয়ায়ে মুসতাজাব বা মকবুল দোয়া।’

রমজানের প্রতি কর্তব্যসমূহ : বেশি বেশি ইসতেগফার ও তসবিহ-তাহলিল করা এবং বেশি পরিমাণে আল্লাহর জিকির করা।

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : রমজানে আল্লাহর জিকিরকারী আল্লাহর ক্ষমাপ্রাপ্ত, এবং রমজানে আল্লাহর দুয়ারে প্রার্থনাকারী হতাশ হবে না।[20]

হাদিসে আরও এসেছে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : তোমরা রমজানে চারটি অভ্যাস বেশি বেশি করে গড়ে তোলো। সেগুলো হলো : বেশি বেশি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু পড়া, বেশি বেশি ইসতেগফার পাঠ করা, জান্নাত প্রার্থনা করা এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাওয়া।[21]


সিয়ামের প্রতি কর্তব্য ও আদবসমূহ : 

১. বেশি বেশি সদকা করা; ইমাম তিরমিজি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা বর্ণনা করেন : শ্রেষ্ঠ সদকা হলো রমজান মাসের সদকা।[22]

হাদিসে আরও এসেছে : রমজান হলো সহমর্মিতার মাস, এ মাসে মুমিনের রিজিক বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

আর রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসেই সবচেয়ে বেশি দানশীল ছিলেন। তাঁর কাছে কেউ কিছু চাইলে তিনি কোনোভাবেই ফিরিয়ে দিতেন না। যেমনটা ইমাম আহমদ রহিমাহুল্লাহর বর্ণনায় এসেছে।

আর অবশ্যই রমজান মাস হলো মাগফিরাত, রহমত, এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে দান ও আবৃত করে নেবার মাস। আল্লাহ তায়ালা তাঁর রহমতপরায়ণ বান্দাদের উপরেই রহমত করেন, আর রহমকারী তারাই যারা আল্লাহর রহমত লাভ করেছে। আর যারা এ মাসে আল্লাহর বান্দাদের দান করে, আল্লাহ তাদের আপন আবরণে আবৃত করার মাধ্যমে দান ও অনুগ্রহ করেন।

২. সেহরি আদায় করা। কারণ এটি খুব বরকতময় একটি সুন্নত। আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে ইমাম বুখারি ও ইমাম মুসলিমসহ অন্যরা বর্ণনা করেন যে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : তোমরা সেহরি আদায় করো, কারণ সেহরির মধ্যে রয়েছে বরকত।[23]

ইমাম আহমদ সায়িদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : সেহরির মধ্যে বরকত রয়েছে তোমরা তা পরিত্যাগ কোরো না; এক মুঠো পানি দিয়ে হলেও সেহরি করো। কারণ আল্লাহ তায়ালা সেহরিকারীদের উপর রহমত করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য দোয়া করে।[24]

সেহরিকে বিলম্বিত করা এবং এতে তাড়াহুড়ো না করা মুসতাহাব। যেমন বর্ণিত হয়েছে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আমার উম্মত ততদিন পর্যন্ত কল্যাণের মধ্যে থাকবে, যতদিন তারা ইফতারে ত্বরাপ্রবণ হবে এবং সেহরিকে বিলম্বিত করবে।[25]

৩. সূর্যাস্তের সাথে সাথেই ইফতার করা। ইমাম আহমদ ও ইমাম তিরমিজি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : আল্লাহ তায়ালা বলেন : আমার সবচেয়ে প্রিয় বান্দা হলো যে সবার চেয়ে দ্রুত ইফতার করে।[26]

৪. তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করা, আর তা না হলে শুকনো খেজুর, আর তা-ও না হলে পানি দ্বারা ইফতার করা। ইমাম তিরমিজিসহ অন্যরা আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন : রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজের আগেই তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করে নিতেন, আর তা না হলে শুকনো খেজুর দিয়ে, আর সেটাও না হলে এক চুমুক পানি দিয়ে ইফতার করে নিতেন।[27]

৫. ইফতারের সময় কুরআন-হাদিসে বর্ণিত দোয়া-দরুদগুলো পাবন্দ সহকারে পাঠ করা। ইমাম আবু দাউদ রহিমাহুল্লাহ এবং অন্য মুহাদ্দিসগণ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণনা করেন : রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন, তখন এই দোয়া পড়তেন : 

ذهب الظمأ وابتلت العروق، وثبت الأجر إن شاء الله تعالى.

উচ্চারণ : যাহাবায যমা-উ ওয়াবতাল্লাতিল উরুক, ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশা আল্লাহু তায়ালা।

অর্থ : পিপাসা দূর হয়েছে এবং শিরাগুলো আর্দ্র হয়েছে, আর প্রতিদান নিশ্চিত হয়েছে ইনশাআল্লাহ।[28]

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে ইবনে সিন্নি বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন : 

اللهم لك صمت، وعلى رزقك أفطرت، فتقبل مني إنك أنت السميع العليم.

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু, ওয়ালা রিজকিকা আফতারতু, ফাতাকবাল মিন্নি, ইন্নাকা আনতাস সামিউল আলিম।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার জন্য রোজা রেখেছি, আপনার রিজিক দিয়ে ইফতার করেছি; সুতরাং আমার থেকে আপনি কবুল করুন, নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।[29]

দারে কুতনির বর্ণনায় এসেছে : তোমাদের কেউ যখন খাবারের সামনে বসবে এবং সে তখন রোজাদার, তাহলে সে এই দোয়া পড়বে : 

اللهم لك صمت، وعلى رزقك أفطرت، وعليك توكلت ، سبحانك وبحمدك تقبل مني، إنك أنت السميع العليم.

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু, ওয়ালা রিজকিকা আফতারতু, ওয়ালাইকা তাওয়াক্কালতু, সুবহানাকা ওয়াবিহামদিকা তাকাববাল মিন্নি, ইন্নাকা আনতাস সামিউল আলিম।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার জন্য রোজা রেখেছি, আপনার রিজিক দিয়ে ইফতার করেছি। আপনার উপরেই ভরসা রেখেছি। আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি এবং আপনার প্রশংসা করছি, আমার থেকে আপনি কবুল করে নিন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

মুয়ায ইবনে যুহরা থেকে ইবনে সিন্নি বর্ণনা করেন, তিনি বলেন : রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন : 

الحمد لله الذي أعانني فصمت، ورزقني فأفطرت

উচ্চারণ : আলহামদুলিল্লাহিল্লাযি আ-আনানি ফ-সুমতু, ওয়ারাযাকানি ফা-আফতারতু।

অর্থ : সমস্ত প্রশংসা ওই সত্তার জন্য যিনি আমাকে সাহায্য করেছেন, বিধায় আমি রোজা রাখতে পেরেছি, এবং যিনি আমাকে রিজিক দান করেছেন, ফলে আমি ইফতার করতে পেরেছি।[30]

ইফতারের সময় বেশি বেশি দোয়া করা মুসতাহাব, কারণ তখন দোয়া কবুল হয়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : তিন ব্যক্তির দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেওয়া হয় না : রোজাদার যখন ইফতার করে, ইনসাফগার বাদশা, আর মজলুমের দোয়া—আল্লাহ তা মেঘের উপর উঠিয়ে নেন এবং এর জন্য আসমানের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, এবং আল্লাহ তখন বলেন : আমার ইজ্জত ও জালালের কসম! আমি অবশ্যই তোমাকে সাহায্য করব—পরে হলেও। ইমাম তিরমিজি বর্ণনা করেছেন এবং একে হাসান সাব্যস্ত করেছেন।[31]

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা ইফতারির সময় এই দোয়া পড়তেন : 

اللهم إني أسألك برحمتك التي وسعت كل شيء أن تغفرلي ذنوبي.

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আস-আলুকা বি-রহমাতিকালল্লাতি ওয়াসসা‘তা কুল্লা শাই আন-তাগফির লি যুনুবি।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার সেই রহমত, যা আপনি সমস্ত জিনিসের উপর ছড়িয়ে রেখেছেন, তা দ্বারা আমি চাচ্ছি আল্লাহ আমার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দিন।[32] রোজাদারের জন্য উচিত হবে, খাদ্যভোজনে ইফতার না করা, এবং সেহরি ও ইফতারে নানা পদের খাবারের আয়োজন না করা। বরং সমস্ত বিষয়েই মধ্যস্থতা ও ভারসাম্যতা কাম্য। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : বনি আদমের সোজা দাঁড়িয়ে থাকার জন্য সামান্য কিছু লোকমাই যথেষ্ট, আর যদি পেট ভরতেই হয় তাহলে পেটের এক-তৃতীয়াংশ খাবারের জন্য, আর এক-তৃতীয়াংশ পান করার জন্য, আর এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য।[33]


[1]     সহিহ বুখারি : ১৮৯৪। সহিহ মুসলিম : ২৫৯৬। এখানে ইমামের বুখারির ভাষ্যে বর্ণিত।

[2]     সহিহ বুখারি : ১৮০৪।

[3]     কিয়াম (قيام) অর্থ রাত জেগে নামাজ আদায় করা।

[4]     সহিহ ইবনে মাজাহ : ১৩৮০। সুনানে নাসায়িসহ অন্যান্য হাদিসগ্ৰন্থে এটি বর্ণিত হয়েছে।

[5]     সুনানে নাসায়ি : ২২৩৪। মুজামুল আওসাত : ৭৮১০। এখানে ইমাম তাবরানির ভাষ্যে হাদিসটি উল্লেখ করা হয়েছে।

[6]     মুসনাদে আহমদ : ৫/৪৬১।

[7]     আল-ফেরদোস বি-মাসুর আল-খাত্তাব : ৩৮২৫।

[8]     অর্থাৎ আজর ও ছাওয়াবের যে ওয়াদা আল্লাহ্ করেছেন তার প্রতি পূর্ণ ঈমান ও বিশ্বাস রেখে এবং শুধু আল্লাহ্‌র কাছ থেকে আজর ও ছাওয়াব হাছিল করার নিয়তে ছিয়াম ও কিয়ামের আমল করা, অন্য কোনো নিয়তে, বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়। [দেখুন : আমার রামাযান—রহমতের দশদিন, পৃষ্ঠা ১৫২, আবু তাহের মিছবাহ্]

[9]     সহিহ বুখারি : ৩৮। সহিহ মুসলিম : ৭৬০।

[10]    সহিহ ইবনে খুযাইমা : ৩/১৯১। শুআবুল ইমান : ৭/২১৬।

[11]    আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব : ২/৬০।

[12]    সহিহ বুখারি : ৬। সহিহ মুসলিম : ৫৮০৪।

[13]    মুসনাদে আহমদ : ৩৮/৪০৬।

[14]    অর্থাৎ দিনে এক খতম, রাতে এক খতম।

[15]    অর্থাৎ কুরআনের তেলাওয়াত বলবে।

[16]    মুসনাদে আহমদ : ৬৬২৬।

[17]    সহিহ মুসলিম : ৮০৪।

[18]    আল-ইসাবাহ ফি তাময়িযিস সাহাবা : ২/১৪৭।

[19]    সহিহ বুখারি : ৪৭১৩। সহিহ ইবনে হিব্বান : ৬২২৫।

[20]    তাবরানি এবং অন্যান্যজন বর্ণনা করেছেন।

[21]    আল-মু‘জাম আল-আওসাত : ৬/১৯৫।

[22]    তিরমিজি : ৬৬৩।

[23]     সহিহ বুখারি : ১৯২৩। সহিহ মুসলিম : ১০৯৫। ইবনে মাজাহ : ১৩৮২। তিরমজি : ৭০৮।

[24]    মুসনাদে আহমদ : ১১৩৯৬।

[25]    মুসনাদে আহমদ : ২১৫০৭।

[26]    তিরমিজি : ৭০০। জয়িফুল জামে : ৪০৪১।

[27]    আস-সিলসিলাতুদ দয়িফা : ৪২৬৯।

[28]    সুনানে আবু দাউদ : ২৩৫৭।

[29]    মাওয়াহেবে লাদুনিয়া : ৩/৪১৮।

[30]    জয়িফুল জামে : ৪৩৪৮।

[31]    সুনানে তিরমিজি : ২৫২৬।

[32]    ইবনে মাজাহ : ৩৪৫।

[33]    ইবনে মাজাহ : ২৭২০।